বাংলাবাজার
ছেয়ে গেছে সুখী মধ্যবিত্ত সাহিত্য-নির্মাণে। প্রতিষ্ঠান সেই লেখাই ছাপায়
যা এই সুখী মধ্যবিত্ত ভাবাবেগকে স্যাটিসফাই করে। সেখানে অন্ত্যজ স্বর,
শ্রেণি সংগ্রাম বা বৈষম্য কিংবা সাহিত্যের প্রকরণ সম্পর্কিত লেখা কলকে পায়
না। বাংলা গদ্যের ‘অন্য স্বর’ প্রতিষ্ঠান সহ্য করতে পারে না। কেননা তাতে
তাদের এতদিনকার বাজার নীতি (মার্কেট পলিসি) ধাক্কা খায়। সন্দীপন
আনন্দবাজারের বার্ষিক সংখ্যায় অসুখ না-থাকার উপন্যাস লিখেছিলেন সম্পাদক
রমাপদ চৌধুরী সহ গোটা আবাপ-র গুষ্টিকে গালি দিয়ে। তো তাঁকে
তখনই ব্লক করা হয়। সাগরময় ঘোষ বানপ্রস্থে যাওয়ার আগে একবার লিখতে
বলেছিলেন, সন্দীপন তাতে মুতে দেন। এই অহংকার অবশ্য দেখাতে পারেননি
হাংরি-যোদ্ধা অরুণেশ ঘোষ। দেশ পত্রিকার কবি-তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে ওই
ছোট্ট একটি কবিতার জন্য।
মলয় রায়চৌধুরী, অজিত রায় কিংবা রবীন্দ্র গুহ কখনো প্রতিষ্ঠানের চোখে ব্লু বয় হতে পারবেন না, যাবতীয় সাহিত্যগুণ সত্ত্বেও। কেননা ওঁদের লেখালিখি ওই সুখী মধ্যবিত্ত মানসতাকে স্যাটিসফাই করে না। ছয় দশকের মলয় রায়চৌধুরী সহ হাংরি জেনারেশনের লেখকদের কথা ভাবুন। ওঁরা বাংলা গদ্যে, কবিতার কথা বলছি না, নিয়ে এসেছিলেন নতুন স্বর, নতুন শব্দ, নতুন আঙ্গিক। তো তাঁদের যেভাবেই হোক মূল ধারার সাহিত্য থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এবং একটু লক্ষ করলেই বোঝা যায়, সেই নির্গমন-পর্বে শুধু আবাপ বা দেশ নয়, অংশ নিয়েছিল প্রায় সব মূলধারার প্রকাশনা। কেননা তারা মিলার-কথিত সেই কথাটা জানে, ভাষাকে যে আক্রমণ করে সেই ভাষাকে বাঁচায়। তো, কে আর সাংস্কৃতিক জারজদের জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজের বাজার নষ্ট করে! এবং যে কথা আগে অনেকবার বলেছি, সময় এসেছে, আবার বলার, মলয়-অজিত-রবীন্দ্র কেউই প্রতিষ্ঠান-বিরোধী নন, প্রতিষ্ঠান এঁদের বিরোধী।
বাংলা গদ্যের এই সাড়ে সব্বনাশ ঘটিয়েছেন ওই জোব্বা পরা দেড়েল বুড়ো। নিজে কখনো প্রান্তিক বা অন্ত্যজ জীবন কাটাননি, সম্ভবত একটি দিনও কাটাননি তাঁদের সঙ্গে, তো লিখেছেন একটা প্রায়-কৃত্রিম গদ্যভাষায়। নোবেল লরিয়েটের লেখা বলে ওটাই বাংলা সাহিত্যের স্ট্যান্ডার্ড ভাষা হয়ে গেল। যার বাক্যছন্দ এখনও ইউরোপীয় ঢঙের। ইংরেজিতে যেমন বলে ‘আই লাভ ইউ’, তো তার বাংলা হল ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। কেউ লিখতেই পারল না যে ‘ভালোবাসি, আমি, তোমাকে’ কিংবা ‘তোমাকে, ভালোবাসি, আমি’।
আর, আমি শালা এক গাড়ল, ওই ভাষাতেই লিখতে শিখেছি!
মলয় রায়চৌধুরী, অজিত রায় কিংবা রবীন্দ্র গুহ কখনো প্রতিষ্ঠানের চোখে ব্লু বয় হতে পারবেন না, যাবতীয় সাহিত্যগুণ সত্ত্বেও। কেননা ওঁদের লেখালিখি ওই সুখী মধ্যবিত্ত মানসতাকে স্যাটিসফাই করে না। ছয় দশকের মলয় রায়চৌধুরী সহ হাংরি জেনারেশনের লেখকদের কথা ভাবুন। ওঁরা বাংলা গদ্যে, কবিতার কথা বলছি না, নিয়ে এসেছিলেন নতুন স্বর, নতুন শব্দ, নতুন আঙ্গিক। তো তাঁদের যেভাবেই হোক মূল ধারার সাহিত্য থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এবং একটু লক্ষ করলেই বোঝা যায়, সেই নির্গমন-পর্বে শুধু আবাপ বা দেশ নয়, অংশ নিয়েছিল প্রায় সব মূলধারার প্রকাশনা। কেননা তারা মিলার-কথিত সেই কথাটা জানে, ভাষাকে যে আক্রমণ করে সেই ভাষাকে বাঁচায়। তো, কে আর সাংস্কৃতিক জারজদের জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজের বাজার নষ্ট করে! এবং যে কথা আগে অনেকবার বলেছি, সময় এসেছে, আবার বলার, মলয়-অজিত-রবীন্দ্র কেউই প্রতিষ্ঠান-বিরোধী নন, প্রতিষ্ঠান এঁদের বিরোধী।
বাংলা গদ্যের এই সাড়ে সব্বনাশ ঘটিয়েছেন ওই জোব্বা পরা দেড়েল বুড়ো। নিজে কখনো প্রান্তিক বা অন্ত্যজ জীবন কাটাননি, সম্ভবত একটি দিনও কাটাননি তাঁদের সঙ্গে, তো লিখেছেন একটা প্রায়-কৃত্রিম গদ্যভাষায়। নোবেল লরিয়েটের লেখা বলে ওটাই বাংলা সাহিত্যের স্ট্যান্ডার্ড ভাষা হয়ে গেল। যার বাক্যছন্দ এখনও ইউরোপীয় ঢঙের। ইংরেজিতে যেমন বলে ‘আই লাভ ইউ’, তো তার বাংলা হল ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। কেউ লিখতেই পারল না যে ‘ভালোবাসি, আমি, তোমাকে’ কিংবা ‘তোমাকে, ভালোবাসি, আমি’।
আর, আমি শালা এক গাড়ল, ওই ভাষাতেই লিখতে শিখেছি!
No comments:
Post a Comment