সব্যসাচী সান্যাল
পোস্টমডার্ন
স্পিরিচুয়ালিসম; ডম্বরুধরের পোস্টমডার্ন থিসিস- বাই পানু সিংহ
[দুপুরে ১২,
ভোরে ৩, গত বেশ ক ‘দিন । ধ্যান, ধারণা, ব্রহ্মসঙ্গীত, মেডিটেশানে
কাজ হল না। নাকে নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ। কাঁপতে কাঁপতে ভাবলুম – পারলে রবি, না পারলে র্যাঁবো। শ্রদ্ধেয়
পঞ্চাশী-কবিরা পথ দেখিয়েই গেছেন—কবিতা আসুক না আসুক—খালাসীটোলার যাত্রী মাত্রেই
কেঁদো কবি! তাছাড়া চিরকালীন এলিটিস্ট
ওঁচাবিত্ত বাঙ্গালির বিদিশি-প্রীতি থাকবে না – হয় না কী! ট্যারা পঞ্চু জাতে মাতাল তালে
কেলুচরণ – সেও প্রোমোটারি করে বেশ কিছু পয়সা কামিয়ে বললে – “দাদা, এবার থেকে “মোদো-পঞ্চা” বলে ডাকলে
সাড়া দেব না কিন্তু, নতুন নাম নিইচি – ফ্রেঞ্চ—“কোয়াসিমোদো”— আজকাল ওয়াইন খাচ্চি
তো!” ইদিকে আমার উজবেক গুরু ওতাবেক ইমামভ দীর্ঘকাল আগে বলেছিলেন – “বাণী মনে রেখ
হে ইন্ডিশ – কাঁপুনি বাগে না এলে, একমাত্র দাবাই নির্জলা ভোদকা উইথ গুঁড়ো শুকনো
লংকা”। গুরুজী ডাক্তার মানুষ, অশ্বিনীকুমারদ্বয়রে বাটিয়া স্টেথোয় লাগাইয়াছেন —
সুইডেন, নরওয়ে সর্বত্র তাঁহার দাবাই
মোক্ষম ফলপ্রসূ – কিন্তু ওই রাশান দাবাই যেই ভারতে আসিল সেইমাত্র অকার্যকর – দুর্ভাগ্য, ভারতে কম্যুনিজমের দশা অধমের মাথায় ছিল না। রাশান ছাড়া তাবৎ বিশ্বের ডাক্তারি শাস্ত্র বলে –
অ্যালকোহল ইমিউনিটি কমায় – পোক্ত ডিপ্লোম্যাটরেও যথেচ্ছ দারুপান এয়ারপোর্টে
ঝামেলায় ফেলে (পরীক্ষা না করে কথা বলি না মোশাই )। যাক, সেই যে রাশান দাবাইয়ে নাক
টিপে লক্ষী (ইমিউনিটি) হাপিশ হইলেন, ফেরার নাম নাই । জ্বর, জ্বালা, কাশি, হাঁচি,
গাঁটে ও মাথায় ব্যাথা – ইতিমধ্যে ছোকরা সম্পাদকের আদেশ – “দাদা, “ম্যাকারেল”-এর জন্য কবিতা নিয়ে গদ্য লিখতে হবে”। ইমিউনিটি ডাউনের কারণে মস্তক আপনা হইতে কাত। -- “তবে, আপনার ওই
তোড়-ফোড় মার্কা কলমে
হবে না, ধীরে সুস্থে, রেস্পন্সিবল লেখা লিখুন—অনেক লোকে পড়বে”। মাইরি, মনে হল জ্যাঠামশাইকে দৈবাদেশ – “খড়ম পায়েই রাখবা আর
পা য্যান জমিন ছাইড়া এক বিঘৎ-এর বেশি না ওঠে!”। ইমিউনিটি ডাউন – মাথা কাত, নাক দিয়া মেঘনা যমুনা (আর ইমিউনিটি ডাউন হলে মানুষ
করে না এমন কাজ আছে না-কী! জন্মদিনে হাতি গিফট পেলে ব্যাজার মুখ করে সিঁড়ির তলায়
কলাগাছ পোঁতে, বিষম কেলোয় পড়ে খুক খুক করে গান গায় – মরণ রে তুঁহু মম টাংরি কাবাব)। ফলে সেটিরিজিন, ফলে কোডিন ফসফেট আর তারপর যা হয় আর কী--
হুলিয়ে ঝাপসা! আয়নায় নিজের মুখ না দেখতে পেয়ে বুঝলুম—অহো, যার-পর-নাই অবজেক্টিভ
হইয়াছি, তদুপরি শান্ত, হাফ-সমাধিস্থ – হাঁ এইবার রেসপন্সিবল লেখা, ল্যাখা যায়! ডোপ
করিয়া রেসপন্সিবল হইবার সরল পদ্ধতির আবিষ্কারক হিসাবে একটু জয়ধ্বনি হয়ে যাক…
তা যাক,
লিখতে গেলে পড়তে হয়, তত্ত্বালোচনা বিশেষ করতে হয় – মানে কবিতা লিখতে গেলে ওসব না
ভাবলেও চলে, কিন্তু কবিতা নিয়ে
গদ্য লিখতে গেলে কেস গুপিনাথ। ফলে ড্যান্ডি টু ডাডা টু লেডি গাগা সব পড়ে ফড়ে
মনে হল—পাইছি ! কবিতা ইজ আ বাইপ্রোডাক্ট অফ ...—মাইরি! এরপর একান্ন দফা শ্রাদ্ধ
প্লাস সরস্বতী পুজোর ফর্দ নামতে শুরু করল! এই শীতে ঘামতে ঘামতে ভাবলুম – মধু-দা’র
গতি না হয় ! শ্যাসে বিলাইতি ছাইড়া কপোতাক্ষ নদ (বাই দ্য ওয়ে কপোতের চোখের মনি কিন্তু
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই লাল – লালজলের নদ --দামোদর না রামোদক – সে আপনিই বুঝবেন,
আমারে ঘাঁটাইয়েন না)। তা ঘামলে একটু খিদে-খিদে পায় – অতএব হাংরি আন্দোলন। তা,
হাংরি বলতেই ক্যাপিটালে মলয় রায়চৌধুরী, একটু আধটু সমীর
রায়চৌধুরী – মিডিয়াম অক্ষরে শক্তি চট্টোপাধ্যায়, দেবী রায় (হারাধন ধাড়া),
উৎপলকুমার
বসু, বিনয় মজুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, বাসুদেব দাশগুপ্ত, ফাল্গুনি
রায়, ত্রিদিব ও আলো মিত্র, আর পড়া যায় না এমন ফন্টে শৈলেশ্বর ঘোষ, সুবো
আচার্য্য, সুভাষ ঘোষ, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়, অনিল করঞ্জাই, করুণানিধান
মুখোপাধ্যায় আর বিলকুল হাওয়া হয়ে যাওয়া অক্ষরে সতীন্দ্র ভৌমিক। ইতিমধ্যে হাতে পড়লো
শৈলেশ্বর ঘোষের, “ঘোড়ার সাথে ভৌতিক
কথোপকথন”—আর খুঁজতে খুঁজতে আচমকা এক পুরোনো শারদীয়া “কবি সম্মেলন” পত্রিকায়
অর্ণব সাহার নেওয়া শৈলেশ্বর ঘোষের ইন্টারভিউ। শৈলেশ্বর এক জায়গায় বলছেন “মলয় রায় চৌধুরী ব’লে কাউকে চিনতাম
না, দু একবার কলকাতায় দেখেছি”, “মলয়, সমীর বা ফাল্গুনি-দের লেখা আমার কোনদিনই ভালো
লাগতনা”, ...শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও আমি
হাংরি আন্দোলন শুরু করি। বাকীরা...”
No comments:
Post a Comment