জীবনানন্দের কবিতা আমাকে শান্তি দেয়। ঘোর দেয়। হাহাকার দেয়। কিন্তু হাংরির কবিতা আমাকে আরো হাংরি করে দেয়। মন চায় আকাশ কামড়াই, বাতাস কামড়াই।
এলেনের দৃষ্টিভঙ্গি বৈশ্বিক
ছিলো। কারণ তার জানাশোনার পরিধি ব্যাপক ছিলো। কিন্তু তিনিও কবিতা নিয়ে এক
অর্থে স্টান্টবাজিই করেছেন। যেহেতু তিনি একটা সময় কবিতা লিখেছেন তাই
নথিভূক্ততো অবশ্যই থাকবেন। কিন্তু ইয়েট্স, বোদলেয়ার, নের্ভাল, জীবনানন্দ, সিলভিয়া প্লাথ, এমিলি ডিকিনসনের মতো মানুষের বুকের ভিতর কি তার কবিতা লেখা থাকবে?
মলয়ের ক্ষমতা আছে সন্দেহ নাই। কিন্তু কবিতায় নানা নিরীক্ষা করতে গিয়ে তিনি কবিতার কী দশাটা যে করেছেন, পড়লেই বুঝতে পারবেন। আপনার জানার কথা তার ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ কবিতাটির আমার ভালো লাগে। কেননা সেই কবিতার মধ্যে তিনি যে প্রচণ্ড গতির সঞ্চার করতে পেরেছিলেন- সেই গতি তার বাক্যস্থ শব্দ ছাপিয়ে অবয়ব নিয়ে তীব্রবেগে প্রবাহিত হয়েছে।
হাংরি-জেনারেশন হলো এলেনের বিট-জেনারেশনের অনুকরণ। শক্তি আর সুনীল বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাই শক্তি সার্থক, ‘দুয়ার এটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া, কেবল শুনি রাতের কড়া নাড়া...।’ সুনীলেরও কিছু কবিতা খুবি ভালো,‘যমুনা আমার হাত ধরো স্বর্গে যাবো।’ সুনীল যদি কেবল কবিতাই লিখতেন, তাহলে অনেক ভালো কবি
হতেন।
তিনি একই সাথে সবকিছু হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সবাই রবীন্দ্রনাথ হতে পারে
না। জীবনানন্দও পারেন নি। তাই তার গল্প আর উপন্যাস কবিতার মতো সার্থক নয়।
হাংরি- জেনারেশনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কবি উৎপলকুমার বসু। আর মলয় এখন পোস্টমর্ডানিজমের প্রতিনিধি। কবিতা লেখেন গিন্সবার্গ, রন প্যাজেট ইহাদের অনুকরণে।
সার্থক শব্দজোড় হলে কবিতা সবকিছুই হজম করতে পারে, মূত্র থেকে মধু পর্যন্ত। যেসব ছন্দমূর্খ কবিতায় শব্দের প্রয়োগ জানে না, তাদের
লেখা পড়তে গেলে কিছু শব্দ চোখা-পেরেকের মতো লাগে। তখন বাপান্ত করতে না
পেরে ত্রাহি করা ছাড়া উপায় থাকে না। মানে ভিখ চাই না আম্মা, কুত্তা লইয়া যান এই অবস্থা।
আমি সবসময় মনে রাখি, প্রকৃত অর্থে যিনি কবিতার পাঠক তিনি কখনোই মাথামোটা গাভী নন।
No comments:
Post a Comment