সেলিম মুস্তফা : আবার
ফালগুনী ।
তাঁর শব্দ আর বানান মাঝে মাঝে অন্যরকম । এখানে তেমনই রাখা হলো । এবার আরও কিছু লেখা পড়া যাক । এবারের লেখাটির নাম ‘কালো দিব্যতা’ । ‘চন্দ্রগ্রহণ’ নামে একটি কাগজে তাঁর সব লেখালেখি প্রকাশিত হয়েছে । এর আগে ‘ক্রমশ’ নামে একটি কাগজ এই কাজটি করেছিলেন । আমি সেখান থেকেই এগুলো দিচ্ছি । ফাল্গুনীর জন্ম ৭ জুন ১৯৪৫, মৃত্যু ৩১ মে ১৯৮১ । সুভাষ ঘোষ ফাল্গুনীর মৃত্যুর পর স্মরণ-সভার যে আহবান রেখেছিলেন তার ছবি নিচে দিলাম । বলা বাহুল্য, তাঁর মৃত্যু তাঁর সতীর্থদের মর্মান্তিক আঘাত দিয়েছিল ।
আজ বাংলা কবিতা তথা বাংলাসাহিত্য, ভাষার যে খোলামেলা ময়দানে এসে পৌঁছেছে, তার জন্য ষাট এবং সত্তরের কুশীলবদের লেখালেখি ছিল এক যুদ্ধ, এবং সেই যুদ্ধ ছিল নিজের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে, মুল্যহীন যাবতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে, পঞ্চাশ-দশক পর্যন্ত তাবৎ সাহিত্যকীর্তির সঙ্গে— জড়িয়ে, ছড়িয়ে, আঘাতে প্রত্যাঘাতে, তথা স্বমারণোৎসবে । এই সব লেখালেখি, তারপরেও, বিভিন্ন চক্রান্তে গুম হতে থাকে । ফলে আজকের দিনের অনেকেই এইসব যুদ্ধের ইতিহাস জানেন না । সন্তর্পণে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাদনখোর তথাকথিত ‘কবি ও লেখক’দের তৎপরতায় । ফলে ‘এটিকেট নির্ভর’ ‘আত্মবিশ্বাসহীন’ সর্বোপরি ‘অর্থহীন’ লেখালেখির পুনরাগমন ঘটতে চলেছে বলে মনে হয় । কিন্তু আগুন তো আর চাপা থাকে না ।
এবার আসুন ‘কালো দিব্যতা’ পড়ি ।
কালো দিব্যতা
ফাল্গুনী রায়
তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
এখানে জিভ নিরপেক্ষ শব্দ দিয়েই করতে হয় সবকিছু
পুরুষাঙ্গ জেগে উঠে হয়ে ওঠে বীন
তখনি এক কালো দিব্যতা করে আক্রমণ
তার তীক্ষ্ণপ্রতিভা খরশান ফেটে পড়ে অট্টহাস্যে
উপহাসের গমকে গমকে ঝলসে ওঠে তার শব্দার্থ
শব্দ কি পরমব্রহ্ম— সব শব্দ ?
গণিকাকবিতাপ্রেমযোনি কিম্বা ঈশ্বর অথবা নভোচারী
শ্লীল শব্দ অশ্লীল শব্দ শব্দ কি পরমব্রহ্ম ?
জানি না জানি না কিছু তবু স্মৃতিদেহী শয়তান বলে চলে
শব্দ কথা বাক্য শব্দ বাক্য কথা কে কোথায় কোন উন্মাদ
আছ পাগল উদাসী উদ্ঘাটন কর এই অনৈতিহাসিক
আত্মলিপি হিচিং ফিচিং এন্তার টনাকটিং নেশাহীন
মাথার ভেতর কি সব হচ্ছে এসব শুধু স্মৃতি এসে
করে গ্রাস উন্মাদ এই বর্ণমালা তখনি সহসা
ছুরি হয়ে ওঠে তাবৎ অতীত আর ধারালো ছুরির
ওপর দিয়ে জীবনের হাঁটা দেখে থ মেরে যায় হটযোগী
আমি থমথমে আকাশের তলায় দেখি জলের দিকে নেবে গ্যাছে সব সিঁড়ি কিছু দেখি না দেখি পাহাড়ি জলের মিঠে স্বাদে নদীগামী সামুদ্রিক ইলিশ মানুষের ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের সংগে জড়িয়ে ফেলছে তার রূপালী অস্তিত্ব আর যৌনতার টানে সন্দেহপ্রবণ পুরুষও নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে ভালোবাসার সংগে
আর দেখি
নাগরিক নিয়নের আলোয়
আমার একক ছায়ার পাশে
তোমার একাকী ছায়ার বদলে
আমার শরীরে এক ল্যাজ
ডারউইন থিওরি বা ফ্রয়েডের নামের বানান ভুলে আমি রাস্তা হাঁটি আমার প্রাগৈতিহাসিক পুরুষের ছায়া হাঁটে আমার পাশে তখন আর আমার মনে থাকে না অন্য কিছু মনে থাকে না আমি কাকে চিট করেছি কে মেরেছে আমার দশ টাকা দুঃখকষ্টের রোজনামচা দিয়ে সাহিত্যের কথা মনে থাকে না এমনকি খোদ ভিয়েৎনাম দিবসে ভুলে যাই ভিয়েৎনাম সমস্যা
সে সময় মনে থাকে ঠিক বেলা পাঁচটার পর কলেজফেরৎ
তুমি ঘুরে বেড়াও তোমার পুরুষবন্ধু নিয়ে একা হাঁটি আমি
আর অইসব যুবকদের স্বাস্থল পাছা দেখে জাগে আফশোষ
ইস আমি কেন হলুম না সমকামী ?
তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
সম্মানিত আমি তবু পথ চলি
হাঁটতে হাঁটতেখুলে পড়ে হাঁটু থেকে মালাইচাকী
হাঁটুগেড়ে পড়ে যাই তবু নতজানু আর হতে পারি না কারো কাছে
প্রেমের কথা ভাবলে কনকনিয়ে ওঠে দাঁতের গোড়া
অবশ্য এসব অসুখ আমি সারিয়ে ফেলতে পারবো
কেননা আগেও মানে শরীরে ল্যাজগজানো বা সমকামী
হতে না পারার আফশোষ জাগার আগেও আমি রাস্তা
হাঁটতুম একা এবং মারাত্মক আমি আসলে
মাতৃজঠর থেকে চিতা ওব্দি হেঁটে যাবার পরেও জীবনের প্রত্যাশী
আমি হাঁটতু্ম— হাঁটব— হেঁটে যাবো আমি হাঁটতু্ম
আমার মাথার ওপরে কবি ও বিজ্ঞানীর নভোমণ্ডল
আমার শির ও শরীরের পাশে ট্র্যাফিকের তিন আলো
আমি মাতাল কবিদের সাথে গণিকাপল্লীর ভেতর
দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভেবেছি সাবিত্রীসত্যবানের কথা
আমার মাথা ফুঁড়ে জ্বলে উঠত জ্বলন্ত মোমবাতি সে সময়
ব্রহ্মতালুর ঘি জ্বলে যেত দাউদাউ চটাচট পুড়ে যেত সব চুল
অবশ্যই আমি সম্মোহিত করে রাখতুম অন্যদের তারা শুধু আমার অপরিচ্ছন্ন জামাকাপড় ও গাঁজা টানার পর দাড়িগোঁফময় মুখের রবীন্দ্রসংগীত দেখতে ও শুনতে পেত তারা দেখত না চার্লি চ্যাপলিনের চেয়ে দক্ষ কৌতুক অভিনেতা হয়ে আমি কিরকম নিজেকে ভুলিয়ে রাখছি অহেতুক কৌতুকে কিন্তু আমি দেখতুম পুরানো গল্পের মতন আমার নিজস্ব কৌতুকের ভেতরে দুঃখ— সেই দুঃখ দেখে আমি হেসে উঠেছি হো হো শব্দে সেই শব্দে ভেঙে গিয়েছিল বুঝি জীবনানন্দীয় ভাঁড়েদের কবিতার আসর এমন কি যেসব প্রথম পোয়াতী মৃতবৎসা হবার বেদনায় হয়েছিল মূক যেসব ব্যর্থপ্রেমিক ঠিক করেছিল তাদের হারানো প্রিয়ার যোনি চিতা হতে করে নেবে লুঠ তারাও জেগে উঠেছিল— জীবনের ভাঙাসুর তাদের হয়েছিল সহসা প্রাণবান
কিন্তু আমি হাসি থামিয়ে দিতুম
তখনি অল কোআইট ইন দি ফিউরিয়াস ফ্রণ্ট
র্যা বোর প্যারিস কিমবা মিলারের আমেরিকা
অনায়াসে নেমে আসে তখন খালাসীটোলায়
ওকি গংগা না জর্ডন কিমবা কলরোডা
সব কিছু মিলে মিশে হ’ত একাকার
জানা অজানার মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় উইমেন্স কলেজের অনার্সছাত্রী আর
হাড়কাটার বেশ্যার ঋতুরক্তের রঙ এক
ঘুম ও জাগরণের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় সাম্যবাদীর ও প্রিয়ার
দরকার হাংরীদের মত
স্মৃতি ও বিস্মৃতির মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় যৌনতার কাছে গেলে নারীও হয়ে ওঠে
অমৃত ধর্ম ও অধর্মের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় তুমি অনন্ত তুমি আনন্দ
আজ তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
তাঁর শব্দ আর বানান মাঝে মাঝে অন্যরকম । এখানে তেমনই রাখা হলো । এবার আরও কিছু লেখা পড়া যাক । এবারের লেখাটির নাম ‘কালো দিব্যতা’ । ‘চন্দ্রগ্রহণ’ নামে একটি কাগজে তাঁর সব লেখালেখি প্রকাশিত হয়েছে । এর আগে ‘ক্রমশ’ নামে একটি কাগজ এই কাজটি করেছিলেন । আমি সেখান থেকেই এগুলো দিচ্ছি । ফাল্গুনীর জন্ম ৭ জুন ১৯৪৫, মৃত্যু ৩১ মে ১৯৮১ । সুভাষ ঘোষ ফাল্গুনীর মৃত্যুর পর স্মরণ-সভার যে আহবান রেখেছিলেন তার ছবি নিচে দিলাম । বলা বাহুল্য, তাঁর মৃত্যু তাঁর সতীর্থদের মর্মান্তিক আঘাত দিয়েছিল ।
আজ বাংলা কবিতা তথা বাংলাসাহিত্য, ভাষার যে খোলামেলা ময়দানে এসে পৌঁছেছে, তার জন্য ষাট এবং সত্তরের কুশীলবদের লেখালেখি ছিল এক যুদ্ধ, এবং সেই যুদ্ধ ছিল নিজের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে, মুল্যহীন যাবতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে, পঞ্চাশ-দশক পর্যন্ত তাবৎ সাহিত্যকীর্তির সঙ্গে— জড়িয়ে, ছড়িয়ে, আঘাতে প্রত্যাঘাতে, তথা স্বমারণোৎসবে । এই সব লেখালেখি, তারপরেও, বিভিন্ন চক্রান্তে গুম হতে থাকে । ফলে আজকের দিনের অনেকেই এইসব যুদ্ধের ইতিহাস জানেন না । সন্তর্পণে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাদনখোর তথাকথিত ‘কবি ও লেখক’দের তৎপরতায় । ফলে ‘এটিকেট নির্ভর’ ‘আত্মবিশ্বাসহীন’ সর্বোপরি ‘অর্থহীন’ লেখালেখির পুনরাগমন ঘটতে চলেছে বলে মনে হয় । কিন্তু আগুন তো আর চাপা থাকে না ।
এবার আসুন ‘কালো দিব্যতা’ পড়ি ।
কালো দিব্যতা
ফাল্গুনী রায়
তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
এখানে জিভ নিরপেক্ষ শব্দ দিয়েই করতে হয় সবকিছু
পুরুষাঙ্গ জেগে উঠে হয়ে ওঠে বীন
তখনি এক কালো দিব্যতা করে আক্রমণ
তার তীক্ষ্ণপ্রতিভা খরশান ফেটে পড়ে অট্টহাস্যে
উপহাসের গমকে গমকে ঝলসে ওঠে তার শব্দার্থ
শব্দ কি পরমব্রহ্ম— সব শব্দ ?
গণিকাকবিতাপ্রেমযোনি কিম্বা ঈশ্বর অথবা নভোচারী
শ্লীল শব্দ অশ্লীল শব্দ শব্দ কি পরমব্রহ্ম ?
জানি না জানি না কিছু তবু স্মৃতিদেহী শয়তান বলে চলে
শব্দ কথা বাক্য শব্দ বাক্য কথা কে কোথায় কোন উন্মাদ
আছ পাগল উদাসী উদ্ঘাটন কর এই অনৈতিহাসিক
আত্মলিপি হিচিং ফিচিং এন্তার টনাকটিং নেশাহীন
মাথার ভেতর কি সব হচ্ছে এসব শুধু স্মৃতি এসে
করে গ্রাস উন্মাদ এই বর্ণমালা তখনি সহসা
ছুরি হয়ে ওঠে তাবৎ অতীত আর ধারালো ছুরির
ওপর দিয়ে জীবনের হাঁটা দেখে থ মেরে যায় হটযোগী
আমি থমথমে আকাশের তলায় দেখি জলের দিকে নেবে গ্যাছে সব সিঁড়ি কিছু দেখি না দেখি পাহাড়ি জলের মিঠে স্বাদে নদীগামী সামুদ্রিক ইলিশ মানুষের ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের সংগে জড়িয়ে ফেলছে তার রূপালী অস্তিত্ব আর যৌনতার টানে সন্দেহপ্রবণ পুরুষও নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে ভালোবাসার সংগে
আর দেখি
নাগরিক নিয়নের আলোয়
আমার একক ছায়ার পাশে
তোমার একাকী ছায়ার বদলে
আমার শরীরে এক ল্যাজ
ডারউইন থিওরি বা ফ্রয়েডের নামের বানান ভুলে আমি রাস্তা হাঁটি আমার প্রাগৈতিহাসিক পুরুষের ছায়া হাঁটে আমার পাশে তখন আর আমার মনে থাকে না অন্য কিছু মনে থাকে না আমি কাকে চিট করেছি কে মেরেছে আমার দশ টাকা দুঃখকষ্টের রোজনামচা দিয়ে সাহিত্যের কথা মনে থাকে না এমনকি খোদ ভিয়েৎনাম দিবসে ভুলে যাই ভিয়েৎনাম সমস্যা
সে সময় মনে থাকে ঠিক বেলা পাঁচটার পর কলেজফেরৎ
তুমি ঘুরে বেড়াও তোমার পুরুষবন্ধু নিয়ে একা হাঁটি আমি
আর অইসব যুবকদের স্বাস্থল পাছা দেখে জাগে আফশোষ
ইস আমি কেন হলুম না সমকামী ?
তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
সম্মানিত আমি তবু পথ চলি
হাঁটতে হাঁটতেখুলে পড়ে হাঁটু থেকে মালাইচাকী
হাঁটুগেড়ে পড়ে যাই তবু নতজানু আর হতে পারি না কারো কাছে
প্রেমের কথা ভাবলে কনকনিয়ে ওঠে দাঁতের গোড়া
অবশ্য এসব অসুখ আমি সারিয়ে ফেলতে পারবো
কেননা আগেও মানে শরীরে ল্যাজগজানো বা সমকামী
হতে না পারার আফশোষ জাগার আগেও আমি রাস্তা
হাঁটতুম একা এবং মারাত্মক আমি আসলে
মাতৃজঠর থেকে চিতা ওব্দি হেঁটে যাবার পরেও জীবনের প্রত্যাশী
আমি হাঁটতু্ম— হাঁটব— হেঁটে যাবো আমি হাঁটতু্ম
আমার মাথার ওপরে কবি ও বিজ্ঞানীর নভোমণ্ডল
আমার শির ও শরীরের পাশে ট্র্যাফিকের তিন আলো
আমি মাতাল কবিদের সাথে গণিকাপল্লীর ভেতর
দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভেবেছি সাবিত্রীসত্যবানের কথা
আমার মাথা ফুঁড়ে জ্বলে উঠত জ্বলন্ত মোমবাতি সে সময়
ব্রহ্মতালুর ঘি জ্বলে যেত দাউদাউ চটাচট পুড়ে যেত সব চুল
অবশ্যই আমি সম্মোহিত করে রাখতুম অন্যদের তারা শুধু আমার অপরিচ্ছন্ন জামাকাপড় ও গাঁজা টানার পর দাড়িগোঁফময় মুখের রবীন্দ্রসংগীত দেখতে ও শুনতে পেত তারা দেখত না চার্লি চ্যাপলিনের চেয়ে দক্ষ কৌতুক অভিনেতা হয়ে আমি কিরকম নিজেকে ভুলিয়ে রাখছি অহেতুক কৌতুকে কিন্তু আমি দেখতুম পুরানো গল্পের মতন আমার নিজস্ব কৌতুকের ভেতরে দুঃখ— সেই দুঃখ দেখে আমি হেসে উঠেছি হো হো শব্দে সেই শব্দে ভেঙে গিয়েছিল বুঝি জীবনানন্দীয় ভাঁড়েদের কবিতার আসর এমন কি যেসব প্রথম পোয়াতী মৃতবৎসা হবার বেদনায় হয়েছিল মূক যেসব ব্যর্থপ্রেমিক ঠিক করেছিল তাদের হারানো প্রিয়ার যোনি চিতা হতে করে নেবে লুঠ তারাও জেগে উঠেছিল— জীবনের ভাঙাসুর তাদের হয়েছিল সহসা প্রাণবান
কিন্তু আমি হাসি থামিয়ে দিতুম
তখনি অল কোআইট ইন দি ফিউরিয়াস ফ্রণ্ট
র্যা বোর প্যারিস কিমবা মিলারের আমেরিকা
অনায়াসে নেমে আসে তখন খালাসীটোলায়
ওকি গংগা না জর্ডন কিমবা কলরোডা
সব কিছু মিলে মিশে হ’ত একাকার
জানা অজানার মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় উইমেন্স কলেজের অনার্সছাত্রী আর
হাড়কাটার বেশ্যার ঋতুরক্তের রঙ এক
ঘুম ও জাগরণের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় সাম্যবাদীর ও প্রিয়ার
দরকার হাংরীদের মত
স্মৃতি ও বিস্মৃতির মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় যৌনতার কাছে গেলে নারীও হয়ে ওঠে
অমৃত ধর্ম ও অধর্মের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে কালোদিব্যতা এসে
জানাত আমায় তুমি অনন্ত তুমি আনন্দ
আজ তোমাদের পৃথিবীর পাশে আমার এই স্বমারনোৎসব
আমার স্বেচ্ছামৃত্যুর এই গান
আমায় দিয়েছে এনে নির্বাণের মহাসম্মান
No comments:
Post a Comment